….. আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে চলো……
পাঁচ বছর বয়স। আমার ছোট ছেলের সমানই তো। কিউট বাচ্চাটির একিউট লিউকেমিয়া। চিকিৎসা শেষ পর্যায়ে। মানে মেইন্টেনেন্স চলছে। কেমোথেরাপির আগে বমি বন্ধ করার ওষুধ দেয়া হয়। প্রতিবারেই বমির ইনজেকশন দেয়ার সময় বমি করে দেয়। আর কেমোথেরাপি দেয়ার সময় কোন কথা নেই।
আজও এসেছে। কেমোথেরাপি দেয়ার জন্য রেডি করছি। সে কান্না করছে।
মা, আবার ইনজেকশন দিচ্ছে।
ব্যাথা পাবেনা তো বাবা। তোমার এই ক্যানুলাতেই দিবে।
না, পাছায় দিবে।
আমি বললাম, আচ্ছা তুমিই বল কোথায় দিবো।
এই খানে। মানে ক্যানুলায়, শিরায়।
আচ্ছা। ক্যানুলাতেই দিবো।
বাচ্চার মা বলছেন, ওকে একটু কি ঘুমের ওষুধ দেয়া যায় না?
কেন?
ঘুমায় না।
এতো ছোট বাচ্চাকে ঘুমের ওষুধ না দেয়াই ভালো।
আমরা সবাই ঘুমাই। কিন্তু সে ঘুমায় না।
আগেও অনেকবার বাচ্চার মা ঘুমের ওষুধের আবদার করেছিলেন। দেই নাই।
আচ্ছা, এই অসুখ শুরু হওয়ার আগেও কি সে ঘুমাতো না?
আগে তো স্বাভাবিক ঘুমাতো। অসুখ হওয়ার পর থেকেই আর ঘুমায় না। আগে ওষুধ খাওয়ানো সম্ভব হতো না। ওষুধ খেতো না। এই ব্লাড ক্যান্সার হওয়ার পর থেকে ওষুধ খাওয়ার ব্যাপারে তার কোন আপত্তি নাই। দেয়া মাত্র নিঃশব্দে খেয়ে ফেলে।
দেশের বাইরে থাকায় একটা তারিখ মিস হয়েছে।
জানেন ডাক্তার সাহেব। আপনি দেশে নাই। সে প্রতিদিন আপনার কথা জিজ্ঞেস করেছে। মা, ডাক্তার কি আসে নাই? ….. ডাক্তার কবে আসবে? …… আমাকে যে ইনজেকশন নিতে হবে। ….. ইনজেকশন না নিলে যে আমি মারা যাবো। ….. আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে চলো।……
আহারে! পাঁচ বছরের একটা জীবন। জীবনকে সে কিভাবে চিনলো! বেঁচে থাকার কতোই না আকুতি তার!
Comments
….. আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে চলো…… — No Comments
HTML tags allowed in your comment: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>