ক্যান্সার থেকে বাঁচার আনন্দ
৬২ বয়সী ভদ্রলোক ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন। আমি হা করে তাকিয়ে আছি। তার কান্না দেখে পাশে বসা ভদ্রলোকের স্ত্রীও একবার চোখ মুছলেন। কি বলব বুঝতে পারছিনা। বলতে গিয়ে চুপ করলাম।
নাহ। কাদুন। মন ভরে কাদুন। দীর্ঘ দিনের পাহারসম কষ্টের বোঝা মাথা থেকে নেমে গেলেও মানুষ কাঁদে। এ কান্না যে আনন্দের। মৃত্যু থেকে বেচে যাওয়ার আনন্দ। বেচে থাকার আনন্দ। মানুষ বেচে থাকতে চায়। জীবনকে ভালবাসে।
লিম্ফোমা নামক এক ধরনের ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত তিনি। কেমোথেরাপি শেষ হয়েছে। পরামর্শমত PET-CT স্ক্যান করে এনেছেন। রেডিওলজিস্ট রিপোর্ট দিয়েছেন শরীরের কোথাও লিম্ফোমার উপস্থিতি অবশিষ্ট নাই। এই পরীক্ষাটি কয়েক বছর আগেও এদেশে ছিলনা। রোগ নির্ণয়ের জন্য নয়, চিকিৎসার সফলতা ফলোআপের জন্য খুবই কার্যকরী একটি পরীক্ষা।
ভদ্রলোকের স্ত্রী বলছিলেন, কয়েকদিন ধরেই খাওয়া দাওয়া করছেননা।
কয়দিন?
যেদিন পরীক্ষা করানোর জন্য ঢাকায় আনা হয়েছে, সেদিন থেকে।
এখন খাবেন, চিন্তা করবেননা।
হ্যাঁ। আমিও তাই ভাবছি। দুশ্চিন্তায় সব বন্ধ করেছেন।
ভদ্রলোক বললেন, হজ্বের জন্য টাকা জমা দিয়েছি। স্বামী স্ত্রী দুজনেই এবার হজ্বে যাওয়ার নিয়ত করেছি।
আলহামদুলিল্লাহ্। খুব ভাল কথা।
দোয়া করবেন।
অবশ্যই। তবে একপেশে দোয়া করলে তো হবেনা। আপনার জন্য এখন দুটো কাজ থাকলো। এক প্রতি তিন মাসে একবার এই এই পরীক্ষাগুলো করে দেখাবেন। দুই হজ্বে গিয়ে আমার জন্য দোয়া করবেন।
অবশ্যই।
মুখে হাসি নিয়ে বিদায় নিলেন। আজ হয়ত একটা ভাল ঘুম হবে তার। সাথে আমারও। এরকম রোগীদের সুস্থ্যতা দেখলে ভাল লাগে।
Comments
ক্যান্সার থেকে বাঁচার আনন্দ — No Comments
HTML tags allowed in your comment: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>