মাস দুয়েক আগে এসেছিলেন একজন সাইকিয়াট্রিস্টের কাছ থেকে রেফার হয়ে। রক্তশূন্যতা। অপুষ্টি জনিত কারণে হিমোগ্লোবিন কিছুটা কমে গিয়েছিল। চিকিৎসা দিয়েছি। এখন হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিক। কিন্তু সমস্যা দূর হয় নাই। শরীর দূর্বলতা আছেই। পায়ে বল পায়না। ঘুম হয়না।

আবার একটু ভালো করে দেখেন। হিমোগ্লোবিন ঠিক হয়নাই। আমার শরীরে রক্ত কম।
হিমোগ্লোবিন তো ঠিকই আছে। আপনার কেন মনে হচ্ছে এরকম?
একটা জ্বিন এসে আমার রক্ত খেয়ে নেয়। আমি যখন ঘুমিয়ে থাকি, শুয়ে থাকি তখন সে আসে।
আপনি তাকে দেখতে পান?
না দেখিনা। অনুভব করি। সে জানালা দিয়ে আসে। একটা বাতাসের মতো ঝাপটা দিয়ে জড়িয়ে ধরে রক্ত খায়।
শুধু রক্তই খায়? অকাম কুকাম করেনা?
না, তা করেনা।
আপনার ছেলে মেয়ে কয়জন?
তিন জন।
পাশে বসা তার স্বামীকে দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, সব কয়জন কি ইনারই, নাকি ঐ জ্বিনেরও আছে।
না, সব কয়জন ইনারই। ঐ জ্বিনের দ্বারা আমার কোন বাচ্চা পয়দা হয়নি।
এই জ্বিনটা কতদিন থেকে আপনার কাছে আসে?
আমার একটা জা আছে। আমারই মামাতো বোন। ওর সাথে অনেক দিন আগে ঝগড়া হয়েছে। ওর মামা তাবিজ তদবির করে। সেই এই আমার পিছনে লাগিয়ে দিছে।

এসিস্ট্যান্ট ডেকে তার সাথেই সাইকিয়াট্রির প্রফেসর সালাম স্যারের কাছে পাঠালাম। তার স্বামী বলছিলেন তাকে আগে যে সাইকিয়াট্রিস্ট চিকিৎসা দিয়েছিলেন তার ওষুধ রোগী খায়নি। রোগীকে বললাম, উনি অনেক বড় প্রফেসর। দোয়া তাবিজ জানেন। একবার ঘুরে আসেন।

ঘুরে এসে খুব খুশী।
এই ডাক্তারকে কেন আগে দেখাইনি! খুব ভালো। ভালো করে সব শুনেছেন। বেশি ওষুধ দেয়নি।
বললাম, উনি যে ওষুধগুলো লিখে দিয়েছেন সেগুলো ঠিকমতো খাবেন। এই ওষুধ আপনার রক্তের সাথে মিশে যাবে। তখন আপনার রক্তের স্বাদ পরিবর্তন হয়ে যাবে। জ্বিনের আর খেতে ভালো লাগবে না, খাবেও না। আপনার রক্তও আর কমবেনা।